নোয়াখালীতে গত ১৭ বছর ধরে ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ থাকার অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা। ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে এ ধরনের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। বিস্তারিত জানুন এই ব্লগে।
১৭ বছর নোয়াখালীতে ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ ছিল ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে!
ইসলামী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ওয়াজ-মাহফিল। এটি ধর্মীয় জ্ঞান প্রচার ও সমাজ সংস্কারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নোয়াখালীর মানুষের জন্য এই ধারাটি গত ১৭ বছর ধরে বন্ধ ছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতা গোলাম মোমিত ফয়সাল। তিনি দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে নোয়াখালীতে কোনো ওয়াজ-মাহফিল করতে দেওয়া হয়নি।
কীভাবে ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ করা হয়েছিল?
গোলাম মোমিত ফয়সাল জানান, নোয়াখালীতে কোনো ভালো ইসলামি বক্তা আসতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হতো। কখনো কখনো পুলিশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বক্তাদের আটক করে কারাগারে পাঠানো হতো। এমনকি তাফসীর মাহফিল আয়োজনের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হতো।
তিনি বলেন,
“কোনো ভালো বক্তা আসলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হতো। মানুষ ১৭ বছর ধরে কোরআন-হাদিসের কথা শুনতে পারেনি। এটি একটি ধর্মীয় নিপীড়নের উদাহরণ।”
ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ থাকার ফলাফল
ওয়াজ-মাহফিল সমাজে নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, নোয়াখালীতে ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ থাকার ফলে সমাজে অন্যায়, ব্যভিচার, এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ বেড়েছে। তিনি বলেন,
“সমাজে আলেমরা যখন নৈতিকতার কথা বলেন না, তখন সমাজে অন্যায়ের মাত্রা বেড়ে যায়। ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ থাকায় নোয়াখালীতে এমনটাই ঘটেছে।”
নতুন যুগের সূচনা
সরকার পরিবর্তনের পর মানুষ এখন ধর্মীয় কার্যক্রম করতে পারছে বলে দাবি করেন তিনি। বিএনপির নেতা বলেন,
“আজকে মানুষ স্বাধীনভাবে ওয়াজ-মাহফিল করতে পারছে। এটি আমাদের জন্য আশার বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে ইসলামের প্রচার আরও বৃদ্ধি পাবে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ধর্মীয় কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দেওয়া হবে।
মাহফিলের আয়োজন এবং বক্তব্য
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নে আয়োজিত এই তাফসীর মাহফিলে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীপুর ফয়েজিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইয়াছিন করিম। প্রধান মেহমান হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুহাদ্দিস রফিক উল্লাহ আফসারী।
মাহফিলে বক্তারা সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ওবায়দুল কাদেরের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে অতীতে তারা এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে কখনোই বাধা দেয়নি।
উপসংহার
১৭ বছর ধরে নোয়াখালীতে ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ থাকার অভিযোগ একটি গুরুতর বিষয়। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর একটি আঘাত বলে অনেকে মনে করেন। ধর্মীয় কার্যক্রমে বাধা দেওয়া সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ডেকে আনতে পারে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের উচিত ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
আপনার মতামত দিন:
আপনি কি মনে করেন, ধর্মীয় কার্যক্রমে বাধা দেওয়া ঠিক? আপনার মতামত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন।