আজমেরী হক বাঁধনের জীবনের সংগ্রামী গল্প, সঙ্গীহীন পথচলা, এবং নতুন জীবনের পরিকল্পনার বিস্তারিত জানুন। অভিনেত্রীর সংগ্রাম ও জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করার কাহিনী।
জীবনে সব সময় একজন দানব পেয়েছি : বাঁধনের সংগ্রামী জীবনের গল্প
ভূমিকা
লাক্স তারকা থেকে বলিউডের মতো বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা আজমেরী হক বাঁধন তার কর্মজীবনে সফল হলেও ব্যক্তিগত জীবনে তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক সংগ্রামের পথ। বাঁধনের জীবন কেবলই সাফল্যের গল্প নয়, এটি একজন নারীর অসম্ভব প্রতিকূলতাকে জয় করার গল্প।
পেশাগত জীবনের উত্থান
আজমেরী হক বাঁধনের যাত্রা শুরু হয়েছিল লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে। এরপর তাকে দেখা গেছে রুপালি পর্দায়, যেখানে তার অভিনয়ের দক্ষতা প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবিতে তার অনবদ্য অভিনয় তাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এনে দেয়।
সম্প্রতি বলিউডের সিনেমা ‘খুফিয়া’-তেও তিনি অভিনয় করে নিজের অবস্থানকে আরও সুসংহত করেছেন। তবে তার এই পেশাগত সাফল্যের যাত্রা কখনোই সহজ ছিল না।
বাঁধনের ব্যক্তিগত জীবনের সংগ্রাম
বাঁধনের জীবনের অন্যতম বড় অংশ জুড়ে রয়েছে তার ব্যক্তিগত সংগ্রাম। তার মতে, জীবনের এই দীর্ঘ পথচলায় তিনি কখনো সত্যিকারের সঙ্গী পাননি। বাঁধন বলেন,
“পথচলায় সত্যিকারের একজন সঙ্গী পেয়েছি এমনটা কখনো হয় নাই। সব সময় হয় একজন দানব পেয়েছি, না হলে যে আমাকে অত্যাচার করছে।”
তিনি আরও জানান, তার জীবনে আসা মানুষরা তাকে সাহায্য করার বদলে কেবল বাধাই তৈরি করেছে।
৪০-এর পরে নতুন জীবনের পরিকল্পনা
৪০ বছরে এসে নতুন জীবনের পরিকল্পনা করেছেন বাঁধন। তিনি বলেন,
“৪০ বছর বয়স পার হয়ে গেছে তো! এখন মনে হচ্ছে, একজন সঙ্গী থাকতেই পারে। সঙ্গী ছাড়া মানুষ থাকতে পারে না। আমার পুরো জীবনটা প্রায় সঙ্গী ছাড়াই কেটেছে।”
এ কথা থেকে বোঝা যায়, জীবনের কঠিন অধ্যায়গুলো পার করার পরও তিনি আশাবাদী।
বাঁধনের বিয়ে এবং বিচ্ছেদ
২০১০ সালে বাঁধন তার চেয়ে ২০ বছরের বড় মাশরুর সিদ্দিকী সনেটকে বিয়ে করেন। তবে এই দাম্পত্য জীবন খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। প্রায় চার বছর সংসার করার পর ২০১৪ সালে তারা বিচ্ছেদ করেন।
বিচ্ছেদের পর বাঁধন একাই তার কন্যাসন্তানকে বড় করেছেন। মেয়েকে বড় করার দায়িত্ব কেবল একার কাঁধে নেওয়ার কথা বলতে গিয়ে বাঁধন তার জীবনের সংগ্রামের আরও একটি দিক তুলে ধরেন।
কেমন সঙ্গী চান বাঁধন?
বাঁধনের মতে,
“জীবনসঙ্গীর ক্ষেত্রে আমাকে আমার মতো যে গ্রহণ করবে, সেই জিনিসটা খুব জরুরি।”
তবে তিনি এটাও স্বীকার করেন যে আমাদের সমাজে এমন একজন সঙ্গী খুঁজে পাওয়া খুবই দুর্লভ।
বাঁধনের সংগ্রামী জীবনের বার্তা
আজমেরী হক বাঁধনের জীবন থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো, জীবনের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নিজের জন্য এগিয়ে চলা। পেশাগত জীবনে সাফল্যের জন্য যেমন কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করার জন্য মানসিক শক্তি অপরিহার্য।
উপসংহার
আজমেরী হক বাঁধনের জীবন কেবল একজন অভিনেত্রীর গল্প নয়; এটি সংগ্রামের, সাফল্যের, এবং নারীর আত্মনির্ভরশীলতার গল্প। তার সংগ্রাম ও সাফল্যের কাহিনী আমাদের প্রেরণা জোগায়।
আপনার মতামত দিন:
আজমেরী হক বাঁধনের জীবনের এই গল্প আপনাকে কতটা অনুপ্রাণিত করেছে? আপনার মতামত শেয়ার করুন।